যুগ যুগ ধরে উপেক্ষিত এ এলাকা। বিশ্বখ্যাত ম্যানগ্রোভ ফরেষ্ট সুন্দরবনের বুকে লোনা পানির পলি অবক্ষেপনের মাধ্যমে গড়ে ওঠা এ জনপদ। সাতক্ষীরা জেলায়, শ্যামনগরের জীবনধারায় নারী শিক্ষার গুরুত্ব সুধীজনের অনুভূত হয়। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার স্তর পেরিয়ে এদেশের নারীও উচ্চশিক্ষায় আসীন হতে চায়।সময় আত্মাকে জাগ্রত করে। অনগ্রসর নারীর উন্নয়ন ইচ্ছায় বিশিষ্ট সমাজসেবী ও শিক্ষানুরাগী জনাব আলহাজ্ব এস.এম.আফজালুল হক সাহেবের অর্থায়নে ও অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের সহযোগিতায় ১৯৯৪ সালে গড়ে ওঠে এ অঞ্চলের নারী শিক্ষার উচ্চ স্তরের পীঠস্থান শ্যামনগর আতরজান মহিলা মহাবিদ্যালয়|
মহাবিদ্যালয়ের শুরুতে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড যশোর-এর অধীনে মানবিক, বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ এবং ১৯৯৮ সাল থেকে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচ.এস.সি(বি.এম) শিক্ষাক্রম চালু হয়। ১৯৯৪ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন পেয়ে স্নাতক স্তরে উন্নীত হয় প্রতিষ্ঠানটি।
মহাবিদ্যালয়ে সংখ্যার অপেক্ষা গুনগত মান উন্নয়নের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়, যার ফলে পরীক্ষার ফলাফলে এসেছে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন। সাধারণ স্বরের অধিকাংশ ছাত্রীরা পরবর্তীতে রেখেছে উল্লেখযোগ্য মেধার ছাপ। সহশিক্ষা কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ন সফলতা অর্জন করেছে, বিশেষ করে সাংস্কৃতিক, ক্রীড়া অঙ্গন ও রোভার স্কাউটে। যা ছাত্রীদের করেছে নিজেদের প্রতি আস্থাশীল।
আতরজান মহিলা মহাবিদ্যালয় স্থাপিত শুধু শিক্ষার জন্য নয়। একটি আদর্শিক চেতনায় উদৃপ্ত মানব মন্ডলী তৈরীর প্রক্রিয়ায় এ আয়োজন। কুসংস্কারের কালো পাথর সরিয়ে উপকুলীয় জনপদে আলোকিত মানুষ পথ তৈরী করে সভ্যতার ইতিহাস গড়ার আকাঙ্খায় আতরজান মহিলা মহাবিদ্যালয়ের যাত্রা। ব্যক্তি হিসাবে মানবতার পক্ষে থাকার বিশ্বাস দায়িত্ব পালন করার শেষ সময় পর্যন্ত রাখার প্রত্যাশা আছে। ত্রিশ লক্ষ মানুষের আত্ম ত্যাগের চেতনার ফসল লালন করবে যে সন্তানেরা-আমরা সে সন্তানের জনক হওয়ার প্রত্যাশা রাখি।